ব্র্যান্ডে কাজ করা সবসময় চ্যালেঞ্জের জীবন আহমেদ
জীবন আহমেদ কর্মরত আছেন দেশের শীর্ষ প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন এর ডেপুটি অপারেটিভ ডিরেক্টর হিসেবে| ব্র্যান্ড ও মার্কেটিং সেক্টরে তার রয়েছে দীর্ঘদিনের কাজের অভিজ্ঞতা| এই সেক্টরে চাকরির সুযোগ ও চাকরিপ্রাথীর্দের প্রস্ত্ততির উপায় নিয়ে আলাপ করেছেন দৈনিক ইত্তেফাক এর সাথে, সাক্ষাত্কার নিয়েছেন খালিদ সাইফুল্লাহ্|
মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডিং সেক্টরে আপনার কর্মজীবন সম্পর্কে বলুন
জীবন আহমেদ : ইউনিভার্সিটিতে পড়া অবস্হা থেকেই মিডিয়ার সাথে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজে যুক্ত হই| ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস করেই আড্ডা দিতে চলে যেতাম পরিচিত মিডিয়া সেক্টরের মানুষদের সাথে আড্ডা দিতে| সেখানের সেই আড্ডায় বিভিন্ন ব্যান্ড পেশাজীবিদের সাথে পরিচিত হই| তখন থেকেই ব্র্যান্ড এ কাজ করার প্রবল আগ্রহের শুরু| ধীরে ধীরে বিভিন্ন ব্র্যান্ড এর বিজ্ঞাপন, এক্টিভেশন, মার্কেটিং এজেন্সী, প্রোডাকশন হাউজ, ডিজিটাল মার্কেটিং সহ অন্যান্য অনেক ধরনের কাজে যুক্ত হবার সুযোগ পাই| ব্র্যান্ডে কাজ করা সবসময় চ্যালেঞ্জের| এখানে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে| ছোটবেলা থেকে নতুন কিছু করার চেষ্টা ছিল| পড়াশুনা শেষে ওয়ালটনে জয়েন করি| কিছুদিন কাজ করার পর ব্র্যান্ড ম্যানজার হিসেবে দায়িত্ব পেলাম| নিজের শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করেছি| আসলে আপনি যখন কোন কাজে শতভাগ দিবেন সেই কাজে সফল হওয়ার সুযোগ অনেক বেশি| খুব ভাল লাগে যখন দেখি নিজের প্রিয় ব্র্যান্ড দেশের ইলেক্ট্রনিক্স মার্কেটে শীর্ষ স্হান ধরে রেখে এগিয়ে যাচ্ছে| ওয়ালটনে দীর্ঘসময় ডেপুটি হেড অফ ব্র্যান্ড হিসেবে কর্মরত ছিলাম| বর্তমানে ডেপুটি অপারেটিভ ডিরেক্টর পদে কর্মরত আছি |
বর্তমানে ব্র্যান্ডিং সেক্টরে চাকরির সুযোগ কেমন? জীবন আহমেদ :প্রতিযোগিতামূলক বাজারে প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের অবস্হান ধরে রাখতে প্রতিনিয়তই কৌশল বদলাচ্ছে, নিচ্ছে অভিনব পদক্ষেপ| এরই ধারাবাহিকতায় ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে চাকরির বাজার| দরকার পড়ছে ব্র্যান্ডিং, পাবলিক রিলেশন বা কমিউনিকেশনে দক্ষ জনবলের| তাই সব সেক্টরেই মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডিং এ ভবিষ্যত্ খুব ভালো| ব্র্যান্ডিং সেক্টরে চাকরিপ্রাথীর্র কি কি গুণ ও দক্ষতা থাকা প্রয়োজন?
জীবন আহমেদ :প্রথমত মার্কেটে বা আশপাশে কী হচ্ছে, সে সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা এবং কাস্টমার সম্পর্কে ভাল ধারনা ও তাদের চাহিদা সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে| ব্র্যান্ডিংয়ে কাজ করতে চাইলে মূলত ক্রেতার চাওয়া ও পাওয়া অনুযায়ী কমিউনিকেশন, ইন্টার ডিপার্টমেন্টাল বিভিন্ন টিমের সঙ্গে ভালো কমিউনিকেশন, বিজনেসের অংশীদার বা পার্টনারদের সঙ্গে ভালো কমিউনিকেশন থাকা জরুরি| এছাড়াও ব্র্যান্ডিং আইডিয়া টপ ম্যানেজমেন্টের কাছে উপস্হাপন করে সেই আইডিয়ার রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট কেমন হতে পারে তার ব্যখ্যা দেয়া, কমিউনিকেশনের সকল মাধ্যমগুলোতে ব্র্যান্ডের উপস্হিতি নিশ্চিত করা ইত্যাদি| ব্র্যান্ডিংয়ে নেটওয়ার্কিং দক্ষতা অনেকটা আমাদের শ্বাস প্রশ্বাসের মতোই| তাই নেটওয়ার্কিং দক্ষতা ভালো না হলে এই সেক্টরে সফল হওয়া অসম্ভব|
ব্র্যান্ডিং সেক্টরে সফল হবার জন্য কি কি প্রয়োজন?
জীবন আহমেদ :প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে ক্রেতার মূল সমস্যা কী, কিভাবে সেটার সমাধান করা যাবে, কোম্পানির প্রচারের মাধ্যমে কিভাবে ক্রেতার নিকট পৌঁছানো যায়-এ বিষয়গুলোতে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে| সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য ও পণ্যের গুণগুলো তুলে ধরা খুব জরুরি| এই পেশায় অবশ্যই সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, কমিউনিকেশনের দক্ষতা, বিশ্লেষণী ক্ষমতা ও সৃজনশীলতা থাকতে হবে| এই দক্ষতাগুলো থাকলে প্রাথীর্ যে বিভাগেই পড়াশোনা করুক, এ পেশায় সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে| তবে সফলতা আসলে একদিনে অর্জিত হয়না| এরজন্য প্রয়োজন সেই কাজের প্রতি শতভাগ ডেডিকেশন ও ভালোবাসা|
ব্র্যান্ডিং সেক্টরে চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষাথীর্দের ছাত্রজীবন থেকেই কিভাবে নিজেদের প্রস্ত্তত করা উচিত?
জীবন আহমেদ :শিক্ষাজীবন থেকেই ভালো নেটওয়ার্কিংয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে| মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডিং সেক্টরে সাফল্য পাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা বা ইভেন্টে অংশ নেওয়ার চেয়ে ক্লাব বা সংগঠন চালানো বা প্রতিযোগিতা সফলভাবে আয়োজন করা বেশি কার্যকর| এছাড়াও বিচার বিশ্লেষন, অবজারভেশন ও কমিউনিকেশন দক্ষতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ|
Recent Comments